শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:০১ অপরাহ্ন
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ হুড়মুড়িয়ে বাড়ছিলো চিনির দাম। এর লাগাম টানতে চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু রাজশাহীতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। এখানে চিনি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম যে কমাতে হবে সেটি তারা জানেনই না। আর চিনি কেনার সময়ও তারা দাম কম পাননি। তাই আগের দামেই চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে।
চলতি বছরের বেশিরভাগ সময়ই ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে চিনি। গত আগস্টে হু হু করে বাড়তে থাকে দাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত বৃহস্পতিবার মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে খোলা চিনি ৭৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ৭৫ টাকা কেজি দর নির্ধারণ হয়। শুক্রবার থেকেই এই দাম কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু রাজশাহীতে এ দামে চিনি মিলছে না।
শনিবার সকালে নগরীর সাহেববাজারের সুশীল স্টোরে গিয়ে দেখা গেলো, খোলা চিনিই বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। বিক্রয়কর্মী রহিদুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবারও তারা ৭৮ টাকা কেজি দরে চিনি বিক্রি করেছেন। দুই দিনে দুই টাকা বেড়েছে চিনির দাম। চিনির দাম কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তের খবর তিনি জানেন না।
পাশেই মিতা ট্রেডার্সে অবশ্য খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছিল ৭৮ টাকা কেজি। দোকান মালিক মিহির আলী জানালেন, তার চিনি দুই দিন আগের কেনা। তাই দুই টাকা কমে দিতে পারছেন। নইলে তাকেও এখন ৮০ টাকায় চিনি বিক্রি করতে হতো।
মিহির বলেন, পাইকারী বাজারে তারা যেখান থেকে চিনি আনেন, সেখানে দাম কমেনি। আর সরকার যে চিনির দাম কমাতে বলেছে, সেটিও তার জানা নেই।
এদিকে, প্যাকটজাত চিনির দামেও কোন প্রভাব পড়েনি। এই চিনিও আগের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজি। মেসার্স মমতা ট্রেডার্সের মালিক খাইরুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এটি তীর কোম্পানির চিনি। আগের কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করছি। নতুন করে কেনার সময় দাম কম পেলে কম দামেই বিক্রি করা হবে।
চিনি কিনতে গিয়ে গৃহিনী আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘টিভিতে-পত্রিকায় দেখলাম চিনির দাম কমেছে। বাজারে এসে কম দেখছি না। বরং আগের চেয়ে দুই টাকা বেশি। এসব নজরদারি করার কি কেউ নেই? সরকার ঘোষণা দিলো, কিন্তু বাস্তবায়ন করবে কে?’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি করলে বাজার মনিটরিং কমিটি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। শনিবার সকালে সাহেববাজার এলাকায় দোকানে দোকানে অভিযান চালাচ্ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ। বেশি দামে চিনি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো চিঠি তিনি পাননি। চিঠি পেলে তিনি এ বিষয়টিও দেখবেন।